সবচেয়ে অবাক করা তথ্য—ঘরের মাঠে ভারত এমন বিপর্যয় আগে কখনও দেখেনি। গম্ভীরের অধীনে নয়টি হোম টেস্টে পাঁচটিতে হার—নিউজিল্যান্ডের কাছে ০–৩, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ০–২।
_0.jpeg.webp)
গৌতম গম্ভীর
সোশ্যাল মিডিয়ার গোঁয়ার রাগ বা তীব্র আবেগ নয়—নগ্ন পরিসংখ্যানই এখন গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir) কোচিং-জমানার বিরুদ্ধে কঠিন রায় শোনাচ্ছে। গত ২৫ বছরে ভারতের টেস্ট ক্রিকেটে এমন ভয়াবহ রেকর্ড কোনও পূর্ণকালীন কোচ রেখে যাননি। এমনকি যাঁর নাম শুনলেই ভারতীয় ক্রিকেটে ‘বিশৃঙ্খলার স্মৃতি’ জেগে ওঠে—সেই গ্রেগ চ্যাপেল (Greg Chappell)—তাঁরও রেকর্ড গম্ভীরের চেয়ে ভাল… অন্তত পাতে দেওয়ার মতো!
ভারতীয় ক্রিকেটে ‘জন রাইট যুগ’শুরুর পর (২০০০), মোট আট জন হেড কোচ এসেছেন। তাঁদের সবার টেস্ট রেকর্ড একটা নির্দিষ্ট সীমায় ওঠানামা করেছে—জয়ের হার ৫০–৬০ শতাংশ, পরাজয় ৫ থেকে ৩৩ শতাংশ। যেখানে একেবারে ব্যতিক্রম গম্ভীর। মাত্র দেড় বছরের জমানায় ভারতের টেস্ট দল পরাস্ত হয়েছে প্রায় প্রতি তিন ম্যাচে দু’টিতে—এমন পরিসংখ্যান ভারতীয় ক্রিকেটে আধুনিক যুগে দেখা যায়নি।
রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid) জমানায় ২৪ টেস্টে ১৪ জয়, ৭ হার—লস পারসেন্ট ২৯.২। কোচ অনিল কুম্বলে (Anil Kumble) অনন্য—১৭ টেস্টে মাত্র ১ হার (৫.৯%)। রবি শাস্ত্রী যুগেও (Ravi Shastri) জয়ের শতাংশ ৬০-এর উপরে। এমনকি অতীতের ‘ব্যর্থ কোচ’ বলে পরিচিত কপিল দেবের (Kapil Dev) সময়ও পরাজয়ের শতাংশ গম্ভীরের মতো ভয়াবহ ছিল না। পরিসংখ্যান এক কথায় নির্মম।
সবচেয়ে অবাক করা তথ্য—ঘরের মাঠে ভারত এমন বিপর্যয় আগে কখনও দেখেনি। গম্ভীরের অধীনে নয়টি হোম টেস্টে পাঁচটিতে হার—নিউজিল্যান্ডের কাছে ০–৩, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ০–২। এই দু’টি হোয়াইটওয়াশ দেশের ময়দানে—যেখানে এক দশক ধরে একটিও সিরিজ হারেনি টিম ইন্ডিয়া। এই রেকর্ডই গম্ভীরের পরিসংখ্যানকে ‘অসামান্য খারাপ’ করে তুলেছে।
অস্ট্রেলিয়ায় ১–৩, ইংল্যান্ডে ২–২—ওভারসিজ পারফরম্যান্স খুব খারাপ নয়, কিন্তু কোনওভাবেই শাস্ত্রী-কোহলি যুগের ধারেকাছে নয়। সেই সময় ভারত বিদেশে সিরিজ জয়ের চ্যালেঞ্জ জানাত, এখন লক্ষ্য শুধু টিকে থাকা। গম্ভীরের টেস্ট জমানায় ভারত ১৮ টেস্টের মধ্যে হেরেছে ১০টি—অর্থাৎ লস পারসেন্টেজ প্রায় ৫৬%, যা আধুনিক ভারতীয় টেস্ট ইতিহাসের সর্বনিম্ন মানদণ্ড।
এটাই সেই কারণ, যার ভিত্তিতে বিশ্লেষকরা পরিষ্কার বলছেন—‘গম্ভীর শুধু খারাপ নয়, বরং ভারতের গত ২৫ বছরের সবচেয়ে দুর্বল টেস্ট কোচ!’ টিম-নির্বাচন, ব্যাটারদের রোল, অলরাউন্ডারের বাড়াবাড়ি—সব নিয়ে বিতর্ক তো আছেই। কিন্তু বিতর্কের উপর দাঁড়িয়ে থাকা আসল শক্তি—পরিসংখ্যান—এখনই রায় দিয়ে দিয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন