বিজ্ঞাপন




 বাগনান পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী ও গুরুত্বপূর্ণ জনপদ। এটি হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া মহকুমার অন্তর্গত।

এখানে বাগনান সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া হলো:

১. ভৌগোলিক অবস্থান ও পরিচিতি

  • জেলা ও মহকুমা: এটি পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া মহকুমার অন্তর্ভুক্ত।

  • প্রশাসনিক বিভাগ: প্রশাসনিকভাবে এটি বাগনান-১ এবং বাগনান-২ উন্নয়ন ব্লক—এই দুটি ভাগে বিভক্ত। বাগনান রেল স্টেশনটি বাগনান-২ ব্লকের মধ্যে অবস্থিত।

  • নদ-নদী: শহরটিকে বেষ্টন করে হুগলি নদী পূর্ব সীমানা বরাবর প্রবাহিত হয়েছে। অন্যদিকে, রূপনারায়ণ নদ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সঙ্গে হাওড়া জেলার প্রাকৃতিক সীমানা নির্দেশ করে প্রবাহিত হয়েছে।

  • নামের উৎপত্তি: মনে করা হয়, 'বাগনান' শব্দটি 'বাগ' (দেবী বাগেশ্বরী থেকে আগত) এবং 'নান' (আরবী ভাষায় যার অর্থ রুটি বা গঞ্জ) শব্দ দুটি থেকে এসেছে। অর্থাৎ, দেবী বাগেশ্বরী দেবীর মন্দির ঘিরে যে বাজার বা গঞ্জ গড়ে উঠেছিল, তা থেকেই কালক্রমে 'বাগনান' নামটির সৃষ্টি।

২. যোগাযোগ ব্যবস্থা

  • রেলপথ: বাগনান রেলওয়ে স্টেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশন। এটি হাওড়া এবং খড়্গপুর/মেচেদা-এর মধ্যে অবস্থিত, যা ট্রেন যোগাযোগের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক।

    • হাওড়া থেকে দূরত্ব: প্রায় ৪৪ কিমি।

    • উলুবেড়িয়া থেকে দূরত্ব: প্রায় ১৩ কিমি।

  • সড়কপথ: সড়কপথেও এটি বিভিন্ন রুটের বাসের মাধ্যমে সুসংযুক্ত (যেমন: দিঘা, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, হলদিয়া, বারাসাত ইত্যাদি থেকে বাস পাওয়া যায়)।

৩. ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব

  • বাগনানের এই মাটিতেই স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং শহীদ ক্ষুদিরাম বসু-এর পদধূলি রয়েছে (ক্ষুদিরামের মামাবাড়ি এই অঞ্চলে ছিল)।

  • বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর বাড়িও এই অঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থিত।

  • বাগনানের দেউল এবং বাঁটুল গ্রাম দুটি হস্তশিল্পের জন্য বিখ্যাত।

৪. দর্শনীয় স্থান

  • রূপনারায়ণ ভিউ পয়েন্ট: রূপনারায়ণ নদের তীরে অবস্থিত একটি মনোরম স্থান।

  • বাগনান কালীবাড়ি / খালোর কালীবাড়ি: এটি বাগনানের অন্যতম দর্শনীয় স্থান।

  • গৌড়ীয় মঠ (রামচন্দ্রপুর সেবাশ্রম): একটি ধর্মীয় স্থান।

  • অন্যান্য: মুকুন্দ দিঘি এবং বিভিন্ন নদীর ধারে মনোরম স্থান।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন